বর্গের জন্য ভালবাসা
source: [facebook.com/chamok11]
তোমাকে যদি দুম করে জিজ্ঞেস করি, আচ্ছা ১১৩ এর বর্গ জানি কত? তোমাদের অধিকাংশই মুখে মুখে বলতে পারবে না , আমি জানি। এই লেখাটা ভালো করে পড়লে হয়তো মুখে মুখেই এটা বলে দিতে পারবে। আগে কিছু কথা বলে নিই-
সংখ্যা নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপারগুলোর একটা। আমার ক্লাস নাইন টেনের একটা বড় সময় চলে গেছে সংখ্যা নিয়ে ভাবতে ভাবতে। আর সেই সময়টা যে কী অসম্ভব সুন্দর কেটেছে, সেটা ভাষা দিয়ে বোঝাতে পারব না।
আমার খুব প্রিয় একটা কাজ ছিল মনে মনে সংখ্যার বর্গ করা। খুব দ্রুত পারতাম না (আমি সাধারণ মানুষ, কোন প্রডিজি না), তবে দুই ঘর হলে পারতাম।
তোমাদেরকে চল শিখিয়ে দিই, মনে মনে কিভাবে বর্গ করতে হয়।
আগে ভালো করে এই প্যাটার্নগুলো দেখ। গণিত শিখতে হলে আগে দেখতে শিখতে হবে, গভীরভাবে দেখতে হবে। হৃদয়ের সবগুলো জানালা খুলে দাও, আলো আসুক, বাতাস আসুক- যদি কোন দুঃসংবাদ আসতে চায়, তাকেও আসতে দাও... সবকিছু আসুক... ভুলটাকে পরে ফেলে দেয়া যাবে... ঠিক আছে, তাহলে প্যাটার্নগুলো দেখ...
১১ এর বর্গ = ১২১
১০১ এর বর্গ = ১০২০১
১০০১ এর বর্গ =১০০২০০১
১০০০১ এর বর্গ =১০০০২০০০১
আশা করি এখন আমি যদি জিজ্ঞেস করি, বলো তো,
১ (এরপর ১ কোটিটা শূন্য) ১ <--- এই বিরাট সংখ্যাটাকে বর্গ করলে কত হয়, তুমি নিশ্চয়ই পারবে।
এটার উত্তর হবে-
১ (এরপর ১ কোটিটা শূন্য) ২ (এরপর ১ কোটিটা শূন্য) ১
আবার লক্ষ কর,
১০১ এর বর্গ = ১ ০২ ০১
১০২ এর বর্গ = ১ ০৪ ০৪
১০৩ এর বর্গ = ১ ০৬ ০৯
১০৪ এর বর্গ = ১ ০৮ ১৬
এইটুকু দেখা হলে একটু থামো। ভালো করে আবার দেখ।
মূল সংখ্যাটার দিকে একবার তাকাও, আর এর বর্গের দিকে একবার তাকাও, দেখ কোন মিল খুঁজে পাও কিনা।
একটু তাকালেই দেখবে আমার মূল সংখ্যাগুলো সব শুরু হয়েছে ১ দিয়ে আর তারপর দুইটা ঘর আছে।
বর্গটাতে শুরুতেই আছে ১ । এরপর দুইটা দুইটা করে ঘর রেখেছি। তাকিয়ে দেখ প্রথম দুই ঘরে আছে দ্বিগুণ আর শেষ দুই ঘরে আছে বর্গ।
যেমনঃ ১০৪ এর ক্ষেত্রে প্রথমে ১ এর পর দুইটা দুইটা করে ঘর রেখেছি---
১ -- --
এরপর প্রথম দুই ঘরে বসিয়েছি ০৪ এর দ্বিগুণ ০৮
১ ০৮ --
আর শেষ দুই ঘরে বসিয়েছি ০৪ এর বর্গ ১৬
১ ০৮ ১৬
তাহলে এবার তোমরা বলতে পারবে যে,
১০৫ এর বর্গ = ১ ১০ ২৫
ঠিক একইভাবে ১০৬ এর বর্গ = ১ ১২ ৩৬
এখন যদি প্রশ্ন করি, আচ্ছা বলো তো,
১১২ এর বর্গ কত?
তাহলে সামান্য ঝামেলায় পড়তে পারো...
প্রথমে তো ১ লিখে জায়গা রাখলে দুটো দুটো করে -----> ১ -- --
প্রথম দুই ঘরে বসল ১২ দুগুণে ২৪ -----> ১ ২৪ --
এরপরেই ঝামেলাঃ ১২ এর বর্গ হলো ১৪৪ , এখানে আছে ৩ ঘর। কিন্তু আমাদের বর্গের শেষে তো মাত্র দুটি ঘর ফাঁকা আছে, তাহলে?
চিন্তা কী? শেষ দুই ঘরে ১৪৪ এর ৪৪ বসবে, হাতে থাকবে এক। সেটা গিয়ে যোগ হবে ২৪ এর সাথে, হবে ২৫ ।
তাহলে সংখ্যাটা হবে ১ ২৫ ৪৪
এখন ১৩ এর বর্গ হলো ১৬৯ । সুতরাং ১১৩ এর বর্গ হবে ১ ২৭ ৬৯ ।
যদি উপরের অংশটা ঠিকঠাক দেখে থাকো, তাহলে বলতে পারবে ১ ০১২ এর বর্গ কত?
এবারে ১ এর পর তিনটা ঘর আছে, তাই বর্গ করার সময় ১ এর পর তিনটা তিনটা করে ঘর রাখো এইভাবে---> ১ --- ---
আগের মতো প্রথম তিন ঘরে বসবে ০১২ এর দ্বিগুণ, আর শেষের তিন ঘরে বর্গ; সংখ্যাটা দাঁড়াবে ১ ০২৪ ১৪৪
আমি এতক্ষন যা করলাম সেটা অনেকটা প্রাইমারি স্কুলের স্যারদের মতো-- "তোরা দ্যাখ, এমনে এমনে অঙ্ক করতে হয়"। কেন এটা হলো সেটা বলিনি। কিন্তু গণিতের আনন্দের একটা বড় অংশ এই 'কেন' প্রশ্নটা জুড়ে। তাই তোমাদেরকে বলে রাখি, শিক্ষক যত ভালোই হন না কেন, তাকে সরাসরি বিশ্বাস করে নেবে না। একবার নিজে ভাববে, তিনি এমন কেন বললেন, এটা কেন হলো, এটা কি আসলেই ঠিক- যদি তোমার মন সায় দেয় তবেই বিশ্বাস করতে পারো। এবারে বলি আমার এই নিয়মটা কেন কাজ করে। আসলে এর পেছনে আছে একটা খুবই ক---ঠি---ন সূত্রঃ
(a+b)^2= a^2+2ab+b^2
এটা বোধহয় আমাদের জীবনে শেখা বীজগণিতের প্রথম সূত্রগুলোর একটা। এবারে বোঝাই ১০৪ এর বর্গটা দিয়ে-
১০৪=(১০০ + ৪) ; এখন (১০০+৪)^২=
১০০^২ ---------> ১ ০০ ০০ --------> এজন্যই বলেছিলাম ১ এর পর দুটো দুটো করে ঘর রাখো
+ ২ x ১০০ x ৪ ---------> ৮ ০০ --------> মাঝের প্রথম দুই ঘরে ০৪ এর দ্বিগুণ
+ ৪^২ ---------> ১৬ --------> শেষের দুই ঘরে ০৪ এর বর্গ
-------------------
১ ০৮ ১৬
খেয়াল করো আমি আমার মূল সংখ্যাটাতে সব সময় সামনে ১ রেখেছি। বোঝানো শুরু করার জন্য এটা অনেক ভালো। কিন্তু দুনিয়ার সব সংখ্যাতো আর ১ দিয়ে শুরু হয় না, তাই না? তাহলে ২ ০১৩ এর বর্গ কিভাবে করা যাবে? চিন্তা কী? আমরা তো এখন মূল সুত্রটা জানিই। আগেরবার বর্গের প্রথমে ১ রেখেছিলাম কারণ ১ এর বর্গ ১। এখন মূল সংখ্যায় যদি ২ থাকে, বর্গে থাকবে ৪ - এ আর এমন কী? এরপর তিনটা তিনটা করে ঘর রাখি-
৪ --- ---
লক্ষ কর, আগের বার প্রথম তিনটা ঘরে বসিয়েছিলাম শুধু ০১৩ এর দ্বিগুণ। এবারে কিন্তু তা বসালে চলবে না। কারণ মূল সূত্রে আছে 2ab । তাই বসাতে হবে ২ x ২ x ০১৩ = ০৫২ । শেষের তিন ঘরে আগেকার মতই ০১৩ এর বর্গ। সংখ্যাটা দাঁড়াবে- ----> ৪ ০৫২ ১৬৯
ভেঙ্গে বললে, ২০১৩=(২০০০+১৩) । এখন (২০০০+১৩)^২=
২০০০^২ ---------> ৪ ০০০ ০০০ --------> এজন্যই বলেছিলাম ৪ এর পর তিনটা তিনটা করে ঘর রাখো
+ ২ x ২০০০ x ১৩ ---------> ৫২ ০০০ --------> মাঝের প্রথম তিন ঘরে ২ x ২ x ০১৩ = ০৫২
+ ১৩^২ ---------> ১৬৯ --------> শেষের দুই ঘরে ১৩ এর বর্গ
-------------------
৪ ০৫২ ১৬৯
এই কাজগুলো মনে মনে করাটা কি খুব কঠিন। মনে হয় না।
এবং তুমি কি বুঝতে পারছ, তুমি কত শক্তিশালী হয়ে উঠেছ?
তুমি যদি তোমার কোন বন্ধুকে গিয়ে বলো যে ২০১৩ এর বর্গ- এ আর এমন কী- এটা হলো ৪ ০৫২ ১৬৯ বা চল্লিশ লক্ষ বায়ান্ন হাজার একশ ঊনসত্তর,
তোমার কি মনে হয়, সে অবাক হবে না? অথচ দেখ সূত্রটা কত চেনা; সেই ছেলেবেলার 'এ প্লাস বি হোল-স্কয়ার' এর সূত্র।
বর্গ এ পর্যন্তই। ও আচ্ছা, তোমরা তো 'এ প্লাস বি হোল-কিউব' এর সূত্রও জানো । তাহলে ১০২^৩ এর মান যে ১ ০৬ ১২ ০৮ হয়, এটা বোঝো নাকি, চেষ্টা করে দেখ তো...
এবার আমার কিছু কথা...
আমি এতক্ষণ তোমাদের যা শোনালাম তা একটা ভ্রমণকাহিনী শোনানোর মতো... আমি তোমাদেরকে বললাম, 'দেখ, আমি এসব জায়গায় গিয়েছি, এসব এসব দেখেছি '। তোমরা শুনে আনন্দ পেলে। কিন্তু তোমরা কি বুঝতে পারছ, এই ভ্রমণটা যে নিজে করেছে, সেই আমার আনন্দটা আরও কত লক্ষ-কোটি গুণ বেশি? যতটুকু তোমাদেরকে আমি বলেছি, নিজে তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু দেখেছি। কত সুন্দর সুন্দর অভিজ্ঞতা আমার... যেগুলো লিখে বা বলে বোঝানো অসম্ভব। এটা বোঝা যাবে শুধু নিজে ভ্রমণ করলে। আমার মুখে মুখে বর্গ করার এই সামান্য জিনিসটা নিজে নিজে শিখতে চার-পাঁচ বছর লেগে গেছে , অথচ তোমরা যারা এই লেখাটা পড়ছ , তারা ১০ - ১৫ মিনিটেই শিখে গেলে। এতে তোমাদের মনে হতেই পারে, নিজে এত সময় ধরে শিখে লাভ কী; তার চেয়ে কেউ শিখুক, আমি তার থেকে শিখে নেব। এই ভুলটা যেন না হয়, তার জন্যেই ভ্রমণের কথাটা বললাম। জেনে রেখ, যেটা দেখার জন্য তুমি ভ্রমণে বের হবে, সেখানে যাওয়ার রাস্তাটা তার চেয়েও বেশি সুন্দর হতে পারে। তাই তোমরা ভ্রমণ করো, নিজের জগতে। খুলে দাও হৃদয়ের সবগুলো জানালা, চিন্ত করো নিজের আনন্দে।
চিন্তা জগতে তোমাদের যাত্রা শুভ হোক।
তোমাকে যদি দুম করে জিজ্ঞেস করি, আচ্ছা ১১৩ এর বর্গ জানি কত? তোমাদের অধিকাংশই মুখে মুখে বলতে পারবে না , আমি জানি। এই লেখাটা ভালো করে পড়লে হয়তো মুখে মুখেই এটা বলে দিতে পারবে। আগে কিছু কথা বলে নিই-
সংখ্যা নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপারগুলোর একটা। আমার ক্লাস নাইন টেনের একটা বড় সময় চলে গেছে সংখ্যা নিয়ে ভাবতে ভাবতে। আর সেই সময়টা যে কী অসম্ভব সুন্দর কেটেছে, সেটা ভাষা দিয়ে বোঝাতে পারব না।
আমার খুব প্রিয় একটা কাজ ছিল মনে মনে সংখ্যার বর্গ করা। খুব দ্রুত পারতাম না (আমি সাধারণ মানুষ, কোন প্রডিজি না), তবে দুই ঘর হলে পারতাম।
তোমাদেরকে চল শিখিয়ে দিই, মনে মনে কিভাবে বর্গ করতে হয়।
আগে ভালো করে এই প্যাটার্নগুলো দেখ। গণিত শিখতে হলে আগে দেখতে শিখতে হবে, গভীরভাবে দেখতে হবে। হৃদয়ের সবগুলো জানালা খুলে দাও, আলো আসুক, বাতাস আসুক- যদি কোন দুঃসংবাদ আসতে চায়, তাকেও আসতে দাও... সবকিছু আসুক... ভুলটাকে পরে ফেলে দেয়া যাবে... ঠিক আছে, তাহলে প্যাটার্নগুলো দেখ...
১১ এর বর্গ = ১২১
১০১ এর বর্গ = ১০২০১
১০০১ এর বর্গ =১০০২০০১
১০০০১ এর বর্গ =১০০০২০০০১
আশা করি এখন আমি যদি জিজ্ঞেস করি, বলো তো,
১ (এরপর ১ কোটিটা শূন্য) ১ <--- এই বিরাট সংখ্যাটাকে বর্গ করলে কত হয়, তুমি নিশ্চয়ই পারবে।
এটার উত্তর হবে-
১ (এরপর ১ কোটিটা শূন্য) ২ (এরপর ১ কোটিটা শূন্য) ১
আবার লক্ষ কর,
১০১ এর বর্গ = ১ ০২ ০১
১০২ এর বর্গ = ১ ০৪ ০৪
১০৩ এর বর্গ = ১ ০৬ ০৯
১০৪ এর বর্গ = ১ ০৮ ১৬
এইটুকু দেখা হলে একটু থামো। ভালো করে আবার দেখ।
মূল সংখ্যাটার দিকে একবার তাকাও, আর এর বর্গের দিকে একবার তাকাও, দেখ কোন মিল খুঁজে পাও কিনা।
একটু তাকালেই দেখবে আমার মূল সংখ্যাগুলো সব শুরু হয়েছে ১ দিয়ে আর তারপর দুইটা ঘর আছে।
বর্গটাতে শুরুতেই আছে ১ । এরপর দুইটা দুইটা করে ঘর রেখেছি। তাকিয়ে দেখ প্রথম দুই ঘরে আছে দ্বিগুণ আর শেষ দুই ঘরে আছে বর্গ।
যেমনঃ ১০৪ এর ক্ষেত্রে প্রথমে ১ এর পর দুইটা দুইটা করে ঘর রেখেছি---
১ -- --
এরপর প্রথম দুই ঘরে বসিয়েছি ০৪ এর দ্বিগুণ ০৮
১ ০৮ --
আর শেষ দুই ঘরে বসিয়েছি ০৪ এর বর্গ ১৬
১ ০৮ ১৬
তাহলে এবার তোমরা বলতে পারবে যে,
১০৫ এর বর্গ = ১ ১০ ২৫
ঠিক একইভাবে ১০৬ এর বর্গ = ১ ১২ ৩৬
এখন যদি প্রশ্ন করি, আচ্ছা বলো তো,
১১২ এর বর্গ কত?
তাহলে সামান্য ঝামেলায় পড়তে পারো...
প্রথমে তো ১ লিখে জায়গা রাখলে দুটো দুটো করে -----> ১ -- --
প্রথম দুই ঘরে বসল ১২ দুগুণে ২৪ -----> ১ ২৪ --
এরপরেই ঝামেলাঃ ১২ এর বর্গ হলো ১৪৪ , এখানে আছে ৩ ঘর। কিন্তু আমাদের বর্গের শেষে তো মাত্র দুটি ঘর ফাঁকা আছে, তাহলে?
চিন্তা কী? শেষ দুই ঘরে ১৪৪ এর ৪৪ বসবে, হাতে থাকবে এক। সেটা গিয়ে যোগ হবে ২৪ এর সাথে, হবে ২৫ ।
তাহলে সংখ্যাটা হবে ১ ২৫ ৪৪
এখন ১৩ এর বর্গ হলো ১৬৯ । সুতরাং ১১৩ এর বর্গ হবে ১ ২৭ ৬৯ ।
যদি উপরের অংশটা ঠিকঠাক দেখে থাকো, তাহলে বলতে পারবে ১ ০১২ এর বর্গ কত?
এবারে ১ এর পর তিনটা ঘর আছে, তাই বর্গ করার সময় ১ এর পর তিনটা তিনটা করে ঘর রাখো এইভাবে---> ১ --- ---
আগের মতো প্রথম তিন ঘরে বসবে ০১২ এর দ্বিগুণ, আর শেষের তিন ঘরে বর্গ; সংখ্যাটা দাঁড়াবে ১ ০২৪ ১৪৪
আমি এতক্ষন যা করলাম সেটা অনেকটা প্রাইমারি স্কুলের স্যারদের মতো-- "তোরা দ্যাখ, এমনে এমনে অঙ্ক করতে হয়"। কেন এটা হলো সেটা বলিনি। কিন্তু গণিতের আনন্দের একটা বড় অংশ এই 'কেন' প্রশ্নটা জুড়ে। তাই তোমাদেরকে বলে রাখি, শিক্ষক যত ভালোই হন না কেন, তাকে সরাসরি বিশ্বাস করে নেবে না। একবার নিজে ভাববে, তিনি এমন কেন বললেন, এটা কেন হলো, এটা কি আসলেই ঠিক- যদি তোমার মন সায় দেয় তবেই বিশ্বাস করতে পারো। এবারে বলি আমার এই নিয়মটা কেন কাজ করে। আসলে এর পেছনে আছে একটা খুবই ক---ঠি---ন সূত্রঃ
(a+b)^2= a^2+2ab+b^2
এটা বোধহয় আমাদের জীবনে শেখা বীজগণিতের প্রথম সূত্রগুলোর একটা। এবারে বোঝাই ১০৪ এর বর্গটা দিয়ে-
১০৪=(১০০ + ৪) ; এখন (১০০+৪)^২=
১০০^২ ---------> ১ ০০ ০০ --------> এজন্যই বলেছিলাম ১ এর পর দুটো দুটো করে ঘর রাখো
+ ২ x ১০০ x ৪ ---------> ৮ ০০ --------> মাঝের প্রথম দুই ঘরে ০৪ এর দ্বিগুণ
+ ৪^২ ---------> ১৬ --------> শেষের দুই ঘরে ০৪ এর বর্গ
-------------------
১ ০৮ ১৬
খেয়াল করো আমি আমার মূল সংখ্যাটাতে সব সময় সামনে ১ রেখেছি। বোঝানো শুরু করার জন্য এটা অনেক ভালো। কিন্তু দুনিয়ার সব সংখ্যাতো আর ১ দিয়ে শুরু হয় না, তাই না? তাহলে ২ ০১৩ এর বর্গ কিভাবে করা যাবে? চিন্তা কী? আমরা তো এখন মূল সুত্রটা জানিই। আগেরবার বর্গের প্রথমে ১ রেখেছিলাম কারণ ১ এর বর্গ ১। এখন মূল সংখ্যায় যদি ২ থাকে, বর্গে থাকবে ৪ - এ আর এমন কী? এরপর তিনটা তিনটা করে ঘর রাখি-
৪ --- ---
লক্ষ কর, আগের বার প্রথম তিনটা ঘরে বসিয়েছিলাম শুধু ০১৩ এর দ্বিগুণ। এবারে কিন্তু তা বসালে চলবে না। কারণ মূল সূত্রে আছে 2ab । তাই বসাতে হবে ২ x ২ x ০১৩ = ০৫২ । শেষের তিন ঘরে আগেকার মতই ০১৩ এর বর্গ। সংখ্যাটা দাঁড়াবে- ----> ৪ ০৫২ ১৬৯
ভেঙ্গে বললে, ২০১৩=(২০০০+১৩) । এখন (২০০০+১৩)^২=
২০০০^২ ---------> ৪ ০০০ ০০০ --------> এজন্যই বলেছিলাম ৪ এর পর তিনটা তিনটা করে ঘর রাখো
+ ২ x ২০০০ x ১৩ ---------> ৫২ ০০০ --------> মাঝের প্রথম তিন ঘরে ২ x ২ x ০১৩ = ০৫২
+ ১৩^২ ---------> ১৬৯ --------> শেষের দুই ঘরে ১৩ এর বর্গ
-------------------
৪ ০৫২ ১৬৯
এই কাজগুলো মনে মনে করাটা কি খুব কঠিন। মনে হয় না।
এবং তুমি কি বুঝতে পারছ, তুমি কত শক্তিশালী হয়ে উঠেছ?
তুমি যদি তোমার কোন বন্ধুকে গিয়ে বলো যে ২০১৩ এর বর্গ- এ আর এমন কী- এটা হলো ৪ ০৫২ ১৬৯ বা চল্লিশ লক্ষ বায়ান্ন হাজার একশ ঊনসত্তর,
তোমার কি মনে হয়, সে অবাক হবে না? অথচ দেখ সূত্রটা কত চেনা; সেই ছেলেবেলার 'এ প্লাস বি হোল-স্কয়ার' এর সূত্র।
বর্গ এ পর্যন্তই। ও আচ্ছা, তোমরা তো 'এ প্লাস বি হোল-কিউব' এর সূত্রও জানো । তাহলে ১০২^৩ এর মান যে ১ ০৬ ১২ ০৮ হয়, এটা বোঝো নাকি, চেষ্টা করে দেখ তো...
এবার আমার কিছু কথা...
আমি এতক্ষণ তোমাদের যা শোনালাম তা একটা ভ্রমণকাহিনী শোনানোর মতো... আমি তোমাদেরকে বললাম, 'দেখ, আমি এসব জায়গায় গিয়েছি, এসব এসব দেখেছি '। তোমরা শুনে আনন্দ পেলে। কিন্তু তোমরা কি বুঝতে পারছ, এই ভ্রমণটা যে নিজে করেছে, সেই আমার আনন্দটা আরও কত লক্ষ-কোটি গুণ বেশি? যতটুকু তোমাদেরকে আমি বলেছি, নিজে তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু দেখেছি। কত সুন্দর সুন্দর অভিজ্ঞতা আমার... যেগুলো লিখে বা বলে বোঝানো অসম্ভব। এটা বোঝা যাবে শুধু নিজে ভ্রমণ করলে। আমার মুখে মুখে বর্গ করার এই সামান্য জিনিসটা নিজে নিজে শিখতে চার-পাঁচ বছর লেগে গেছে , অথচ তোমরা যারা এই লেখাটা পড়ছ , তারা ১০ - ১৫ মিনিটেই শিখে গেলে। এতে তোমাদের মনে হতেই পারে, নিজে এত সময় ধরে শিখে লাভ কী; তার চেয়ে কেউ শিখুক, আমি তার থেকে শিখে নেব। এই ভুলটা যেন না হয়, তার জন্যেই ভ্রমণের কথাটা বললাম। জেনে রেখ, যেটা দেখার জন্য তুমি ভ্রমণে বের হবে, সেখানে যাওয়ার রাস্তাটা তার চেয়েও বেশি সুন্দর হতে পারে। তাই তোমরা ভ্রমণ করো, নিজের জগতে। খুলে দাও হৃদয়ের সবগুলো জানালা, চিন্ত করো নিজের আনন্দে।
চিন্তা জগতে তোমাদের যাত্রা শুভ হোক।
Scholarship
www.somewhereinblog.net/blog/SrabonDhara007/29345223
www.somewhereinblog.net/blog/SrabonDhara007/29347076
www.somewhereinblog.net/blog/SrabonDhara007/29347076
কানাডায় উচ্চশিক্ষা- কিছু তথ্য | Higher education in Canada
Source: http://www.somewhereinblog.net/blog/itanjir/28831816
by: Tanjir
অনেক দিন ধরেই বিষয়টির উপরে লিখব ভাবছিলাম। লেখার মূল উদ্দেশ্য যারা কানাডায় আসতেই চান, তারা কিভাবে সবচেয়ে ভাল প্রতিষ্ঠানে আসতে পারেন এবং একই সাথে সবচেয়ে লাভবান হতে পারেন।
শুরুতে এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কিছু প্রাথমিক ধারণা দেই।
কানাডায় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ২-টা লেভেল:
১. আন্ডার গ্রাজুয়েট (ব্যাচেলর ডিগ্রি)
২. পোষ্ট গ্রাড (মাষ্টারস এবং পি এইচ ডি)
বছরকে এরা মূলত: ভাগ করে তিন সেমিস্টারে:
১। ফল (সেপ্টেম্বর- ডিসেম্বর): এটাকেই একাডেমিক ইয়ার-এর (শিক্ষা বর্ষের) শুরু ধরা হয়। সাধারণত সব ছাত্র ছাত্রীকে এই সেমিস্টারে ভর্তি করা হয়। ভর্তির আবেদন-এর সময় বিশ্ববিদ্যালয় অনুসারে আলাদা। সাধারণত আন্ডার গ্রাড লেভেল-এ জুন-এর দিকে এবং পোস্ট গ্রাড লেভেল-এ মার্চ-এপ্রিল-এর দিকে। উল্লেখ্য, ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করাই ভাল।
২। উইন্টার (জানুয়ারী-এপ্রিল): আন্ডার গ্রাড লেভেল-এ অনেকেই উইন্টারে ছাত্র ছাত্রী ভর্তি করে। পোস্ট গ্রাডে এই সেমিস্টারে খুব বেশী নতুন শিক্ষার্থী নেয়া হয় না। তারপরেও চেষ্টা করতে পারেন। ভর্তির শেষ সময় অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বর-এর মধ্যে।
৩। সামার (মে- অগাষ্ট): এই সময় বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর ছুটি থাকে। বিশেষ করে যারা আন্ডার গ্রাড লেভেল-এ পড়ে। পোস্টগ্রাড-দের গবেষণা অথবা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। উল্লেখ্য বেশীর ভাগ ছাত্র ছাত্রী যারা এখানে বাংলাদেশ থেকে পোস্ট গ্রাড লেভেল-এ পড়তে আসে, তারা রিসার্চ ফান্ড থেকে সাহায্য পায়- বিনিময়ে অধ্যাপক ইচ্ছামত খাটিয়ে নেন।
শিক্ষাগত মান:
কানাডার শিক্ষার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল এদের মান প্রায় সমান। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারী কিন্তু স্বায়ত্ব শাসিত। যে বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রোগ্রাম অফার করে, তার ভাল অবকাঠামো আছে। তাই কানাডার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-এর রেংকিং নিয়ে অনেকের দ্বিমত, ত্রিমত আছে। তাই আমি বলব কানাডায় পড়ার জন্য রেংকিং না দেখে অন্যান্য কিছু বিষয় দেখলে অনেক লাভবান হবেন। এগুলো নিয়ে পরে বলছি। এখানে বেশির ভাগ প্রোগ্রাম সেন্ট্রাল-লি কন্ট্রল করা হয়- বোর্ড এর মাধ্যমে। প্রকৌশল বিভাগ প্রত্যেক প্রভিন্স-এ (প্রভিন্স গুলো ইউ এস এ-র স্টেট-এর মত স্বায়ত্ব শাসিত) একটি বোর্ড দিয়ে কন্ট্রল করা হয়। অন্যান্য বিষয় কম বেশী তাই।
খরচ:
এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি আলাদা ভাবে আলোচনা করছি।
থাকার খরচ:
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস-এ থাকতে হলে ডর্মে (বাংলাদেশে হল-এর অনুরূপ) থাকতে হবে। খরচ হবে প্রতি চারমাসে ৩,০০০ থেকে ৭,০০০ ডলার পর্যন্ত- সুযোগ সুবিধার উপর ভিত্তি করে। খাওয়ার খরচ মিল প্লান-এ আলাদা ভাবে কিনতে হবে- ডর্মে থাকলে সেটা সাধারণত বাধ্যতা মূলক। ডর্মে থাকা বাঙ্গালী শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল খাওয়া। মোদ্দা কথা ডর্মে থাকা অনেক ব্যয়বহুল- কিন্তু ঝামেলা মুক্ত।
যারা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন তাদের খরচ একজনের জন্য এরকম হয়:
১। বাসা ভাড়া: ২৫০- ৮০০ ডলার (শেয়ার করে থাকলে কম খরচ)
২। যোগাযোগ: বাস পাস (৬০$-১৫০$) অনেক প্রভিন্স-এ শিক্ষার্থীদের বাস পাস ফ্রি। (যেমন আলবার্টা)
৩। খাওয়া: বাসায় রান্না করলে ১০০-২০০$; বাইরে খেলে: ৩০০-৬০০$
৪। ফোন এবং ইন্টারনেট: শেয়ার করলে খরচ অনেক কমে যায়। কমপক্ষে ৫০-১০০$ ধরে রাখুন।
(উল্লেখ্য: শহর থেকে শহর-এ আলাদা হতে পারে। আপনার থাকার উপর-ও নির্ভর করে। উপরের খরচ একজনের মোটামুটি থাকার মত খরচ।)
এখন পড়ালেখার খরচ-এ আসা যাক। প্রতি একাডেমিক ইয়ার-এ বিশ্ববিদ্যালয় ফি বাবদ খরচ প্রায় ১৫,০০০ থেকে ২৮,০০০ কানাডিয়ান ডলার পর্যন্ত। ইমিগ্রেন্ট বা সিটিজেন-দের জন্য এ খরচ ৪,০০০ থেকে ৭,৫০০ ডলার পর্যন্ত। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার আরো অনেক কম বেতন (৮-১৪ হাজার ডলার)। সাধারণত এসব বিশ্ববিদ্যালয় একটু ছোট শহরে অবস্থিত হয়। তাই ক্যারিয়ার-এর দিকে সুবিধা কম থাকে। কিন্তু ভাল দিক হল খরচ অনেক কমে যায়।
টাকা আসবে?:
আন্ডারগ্রাড: আন্ডারগ্রাড-দের জন্য কানাডায় খুব বেশি সুবিধা নেই। অল্প কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এই লেভেল-এ স্কলারশিপ দেয়; যা মূল খরচ-এর চেয়ে অনেক কম। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়- যারা বেশী বেতন রাখে তারা স্কলারশিপ দিয়ে রেগুলার বেতন-এর সমান করে দেয়ার মত সৌজন্য দেখায়। ভাল রেজাল্ট করলে ছোট খাট কিছু স্কলারশিপ পাওয়া যায়। একাধিক স্কলারশিপ পেলে চাপ অনেক কমে যায়- যা পাওয়া অনেক কঠিন। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়-এর পলিসি-তে বলাই থাকে শুধু মাত্র আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রী হওয়ার কারণে আপনি কোন স্কলারশিপ পেতে পারবেন না। এটা চেক করা গুরুত্বপূর্ণ।
এখানে কিছু প্রোগ্রাম-এ কো-ওপ নামে একটি অপশন অফার করে। এটি অনেকটা ইন্টার্নশিপ-এর মত। তবে কোম্পানীগুলো পে করে এবং বেশ ভাল অঙ্কের। কো-অপ নিয়ে আরেকটি লেখা আমি শিঘ্রী লিখব। তবে কো-অপ-এ ঢুকতে হলে অনেক ভাল সিজিপিএ লাগে- একটি অতিরিক্ত কোর্স এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরীক্ষা দিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়-কে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় ফি বাবদ- তবে যা আসে তা অনেক সাহায্য করে।
এ ছাড়াও অফ ক্যাম্পাস ওয়ার্ক পারমিট-এর সুবিধা আছে। এই সুবিধা পেতে অবশ্য প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। ৬ মাস ফুল টাইম পড়া শুনার পরে আপনি এপ্লাই করতে পারবেন, কিন্তু কাগজ যোগাড় করতে সময় লাগায় মোট ৭-৮ মাস লেগে যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ-কে সন্দেহজনক দেশ-এর তালিকায় যুক্ত করায় প্রসেসিং সময় ১৫ দিনের বদলে কমপক্ষে ৩ মাস লাগে। সব মিলিয়ে প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হবে কাজ করার পারমিশন-এর জন্য। এর আগে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করা অবৈধ। তার আগে এবং পরে অন ক্যাম্পাসে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারেন- যা পাওয়ার সম্ভাবনা শুরুর দিকে খুবই ক্ষীণ। অফ/অন ক্যাম্পাস কাজ করে থাকা খাওয়ার খরচ তোলে সম্ভব।
মূলত আমি বলব, যারা কমপক্ষে পুরো ৩ বছরের টিউশন ফি + প্রথম বছরের থাকার খরচ দেয়ার মত টাকা দিতে সক্ষম শুধু তাদের আসা উচিত। কেন? কানাডা-তে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পণ্যের মত দেখা হয়। কানাডা-র জাতীয় রপ্তানীর একটি বড় অংশ হল শিক্ষা। এখানকার ব্যবস্থা এমন ভাবে করে রাখা আছে যে আপনি কোন আর্থিক সমস্যায় পড়লে সাহায্য করার কেউ নেই। আবার টাকার অভাবে ক্লাস না করলে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট দিবেনা। তাই সবদিক থেকে বিপদ। একবার এরকম অবস্থায় পড়লে তা থেকে বের হওয়া কঠিন- অনেকটাই অসম্ভন। এখানেও আপনাকে সহজে ইমিগ্রেশন-ও দিবেনা। যদি আর্থিক সঙ্গতি না থাকে আমি বলব বাংলাদেশে ব্যাচেলরস শেষ করে আসুন। পোস্ট গ্রাড-এ এখানে অনেক সুবিধা।
পোস্টগ্রাড:
সাধারণত এই লেভেল-এ আসা সব ছাত্র ছাত্রী স্কলারশিপ এবং বিভিন্ন ফান্ডিং-এ আসে। টিএ (টিচিং এসিস্টেন্ট- ছাত্র ছাত্রীদের বিশেষ করে আন্ডার গ্রাড-দের সাহায্য করা), আর এ (রিসার্চ এসিস্টেন্ট- গবেষণায় সাহাযয় করা) এবং বৃত্তির টাকা মিলে সাধারণত যে টাকা অফার করে তাতে একা হলে নিজের টুইশন ফি, থাকা খরচ-এর পরেও বাসায় টাকা পাঠাতে পারবেন। তবে ভর্তি অনেক প্রতিযোগিতা মূলক। শর্ত একটাই- এভারেজ সাধারণত এ- রাখতে হবে। এর চেয়ে কমে গেলে বেতন আবার পুরোটা দিতে হবে আপনাকে। তাই এই কথাটি মাথায় রেখে মন দিয়ে পড়লে আশা করি কোন সমস্যা হবেনা। আর যারা সামর্থ রাখেন খরচ করার কিন্ত রেজাল্ট ভাল নেই তারা নিজ খরচে আসতে পারেন।
ভর্তি:
বাংলাদেশের এজেন্ট আর দালালদের দৌরাত্মে হয়তো ভয় পেতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে আন্ডার গ্রাড লেভেল-এ ডাইরেক্ট এপ্লাই করা একটু কষ্টসাধ্য। তবে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড থাকলে কাজটি অনেক সহজ হয়ে যায়। নিচে কিছু লিন্ক দিব যেগুলো আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ওয়েব সাইটে গেলেই দেখবেন শুরুর পেইজ-এ "প্রোস্পেক্টিভ স্টুডেন্ট" অথবা "ফিউচার স্টুডেন্ট" নামে একটি লিন্ক আছে। মোটা মুটি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইটে এটি একই। এখানে ক্লিক করলে জানতে চাবে আপনি কোন লেভেল-এ আগ্রহী। এখন নিশ্চয়ই জেনে গেছেন কোন লেভেল। সেখানে প্রয়োজনীয় সব তথ্য, যোগ্যতা, আবেদন পত্র পাবেন। ২-ভাবে আবেদন করা যায়। ১. কাগজের মাধ্যমে ২. অনলাইন-এ সরাসরি। কাগজের মাধ্যমে আবেদন করার ফরম অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট করতে পারেন। ব্যাঙ্ক ড্রাফট করতে যে কি ঝামেলা হবে সেটা আমি কিছু বলতে চাইনা- হয়তো এটাই হবে আপনার প্রথম বাধা। অনলাইনে এপ্লাই করার সময় মনে রাখবেন- এটা সিরিয়াস ব্যাপার। আবেদন পত্র শেষ হওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ফি না দিলে এটা কোন কাজে আসবেনা। এবং আবেদন করার আগে শিওর হয়ে নিবেন সেটা ঠিক সাইট। অনেক ভুয়া সাইট-এ প্রতারিত হতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে অবশ্যই খবর নিবেন। ওয়েব-এ ঐ বিশ্ববিদ্যালয়-এর নিজের সম্বন্ধে বলা সব কথা বিশ্বাস করবেন না। অনেকে অদ্ভুত কিছু রেংকিং-এ নিজেদের ভাল অবস্থান দাবি করে- তাতে খুব একটা পাত্তা দিবেন না। কি কি দেখতে পারেন?
১। বিশ্ববিদ্যালয়-টির নাম আপনি আগে কারো কাছ থেকে শুনেছেন কিনা।
২। শুনে থাকলে কি শুনেছেন।
৩। আপনি যে বিষয়ে আগ্রহী সেই বিষয়-এ ঐ বিশ্ববিদ্যালয়-এর আলাদা সাইট আছে- সেখানে যান। তাদের ফেকাল্টিদের প্রোফাইল দেখুন। কি কি রিসার্চ করে তা দেখুন।
৪। আপনার আগ্রহের প্রোগ্রামে কি কি ফেসিলিটি আছে তা দেখুন।
৫। ঐ বিষয়ে তাদের কোন সাম্প্রতিক সাফল্য দাবি করার মত কিছু আছে কিনা দেখুন। থাকলে তা যাচাই করুন।
৬। বিশ্ববিদ্যালয়-টি স্কলারশিপ প্রদানে কতটা উদার খবর নিন।
৭। পোস্ট গ্রাড লেভেল-এ হলে ডিপার্টমেন্ট-এর উপরের দিকে কারো (চেয়ার, ডিন, এসোসিয়েট ডিন অথবা আপনার গবেষণার বিষয়ের সাথে মিলে এমন কোন অধ্যাপক-এর সাথে যোগাযোগ করুন এপ্লাই করার আগে।
৮। বিশ্ববিদ্যালয়-টি যেই শহর-এ অবস্থিত তা সম্পর্কে জানুন। সেখানে কি কি ইন্ডাস্ট্রি আছে- সেসব জায়গায় আপনার বিষয়ের চাহিদা কিরকম। দিন শেষে লোকাল-দের প্রাধান্য সবাই দেয়।
৯। থাকার সুবিধা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে খবর নিন। এসব খবর সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়-এর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী-দের অফিস-এ পাওয়া যায়। (আই এস ও নামে সাধারণত পরিচিত)
এই মুহূর্তে আর কিছু মনে আসছেনা। পরে যোগ করব।
পোস্ট গ্রাড লেভেল-এ কোথাও কোথাও আপনাকে বলবে আসার পরে একটা পরীক্ষা দিতে- কোন মডিউলে পাস না করলে কিছু আন্ডার গ্রাড কোর্স নিতে বলবে।
নিচে কিছু প্রয়োজনীয় সাইট-এর এড্রেস দিলাম:
১। http://www.ouac.on.ca/ - এটি অন্টারিওর বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তির অনলাইন সাইট। এটার মাধ্যমে এপ্লাই করতে পারেন অথবা সরাসরি এপ্লাই করতে পারেন। এটা নির্ভরযোগ্য। খরচ একটু বেশী- কিন্তু টাকা কোথায় ঢাললেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবেনা এবং অনলাইনে আপনার ভর্তির স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন। এপ্লাই করার পর এই সাইট নিয়মিত চেক করা উচিত। গুরুত্বপূর্ণ: সঠিক ফরম পূরণ করবেন।
২। http://www.aucc.ca/index_e.html কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাইট। এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন। কিন্তু সব সঠিক নয় (কিছুটা এদিক সেদিক)।
৩। http://oraweb.aucc.ca/dcu_e.html - প্রোগ্রাম অনুসারে সার্চ করে, বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একটি লিস্ট বানাতে পারেন।
৪। http://cic.gc.ca/english/study/index.asp - সরকারী সাইট- এখানে স্টাডি পারমিট এবোং পড়াশুনা বিষয়ক সব ধরণের ফর্ম এবং সরকারী সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন।
৫। http://www.studyincanada.com/english/index.asp আরেকটি উপকারী সাইট।
উপরের লেখাটি যারা পড়লেন তারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন আন্ডারগ্রাড লেভেল-এ সামর্থ্য না থাকলে আমি না আসতে উপদেশ দিচ্ছি। কারণ ২-টা:
১। আন্ডারগ্রাড লেভেল-এ বাংলাদেশের পড়াশুনার মান কোনো অংশে কম নয়। আপনি সতর্ক থাকলে এবং চোখ কান খোলা রেখে নতুন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে আগ্রহী হলে কানাডার সাথে খুব বেশি ব্যবধান থাকবেনা।
২। যারা বাংলাদেশে ভাল কোথাও ভর্তি হতে না পেরে কানাডাতে আসার চিন্তা করে থাকলে বলব আপনি বিপদে পড়বেন। প্রথমত আপনার রেজাল্ট ভালনা; কানাডায় গিয়ে পারফরমেন্স ভাল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ কানাডা-তে পড়ালেখা ভাল রকমের কঠিন। আবার টাকা না থাকার কারণএ কোথাও সাহায্য পাবেননা। কাজ করে বেতন + থাকা খাওয়ার খরচ তোলে অসম্ভব। একেবারেই অসম্ভব। তাই নিজের জীবন নষ্ট না করে বাংলাদেশে কোনো প্রাইভেট ইউনি-তে গ্রাজুয়েশন শেষ করুন। দেশে অনেক অনুকূল পরিবেশ পাবেন। তারপর ইমিগ্রেশন-এ এপ্লাই করে চলে আসুন। এটা নিয়ে আমার আরেকটি লেখা দেয়ার ইচ্ছা আছে।
আজকে তাহলে এই পর্যন্তই। হয়ত অনেক ভুল আছে। কেউ ধরিয়ে দিলে উপকৃত হব, এবং অন্যান্যরাও উপকৃত হবে। আশা করি সবাই ছোট খাট ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। লেখাটি অগাছালো মনে হলে বলবেন। রাতে না ঘুমিয়ে লিখলাম। মাথা ঠিক কাজ করছেনা। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
by: Tanjir
অনেক দিন ধরেই বিষয়টির উপরে লিখব ভাবছিলাম। লেখার মূল উদ্দেশ্য যারা কানাডায় আসতেই চান, তারা কিভাবে সবচেয়ে ভাল প্রতিষ্ঠানে আসতে পারেন এবং একই সাথে সবচেয়ে লাভবান হতে পারেন।
শুরুতে এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কিছু প্রাথমিক ধারণা দেই।
কানাডায় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ২-টা লেভেল:
১. আন্ডার গ্রাজুয়েট (ব্যাচেলর ডিগ্রি)
২. পোষ্ট গ্রাড (মাষ্টারস এবং পি এইচ ডি)
বছরকে এরা মূলত: ভাগ করে তিন সেমিস্টারে:
১। ফল (সেপ্টেম্বর- ডিসেম্বর): এটাকেই একাডেমিক ইয়ার-এর (শিক্ষা বর্ষের) শুরু ধরা হয়। সাধারণত সব ছাত্র ছাত্রীকে এই সেমিস্টারে ভর্তি করা হয়। ভর্তির আবেদন-এর সময় বিশ্ববিদ্যালয় অনুসারে আলাদা। সাধারণত আন্ডার গ্রাড লেভেল-এ জুন-এর দিকে এবং পোস্ট গ্রাড লেভেল-এ মার্চ-এপ্রিল-এর দিকে। উল্লেখ্য, ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করাই ভাল।
২। উইন্টার (জানুয়ারী-এপ্রিল): আন্ডার গ্রাড লেভেল-এ অনেকেই উইন্টারে ছাত্র ছাত্রী ভর্তি করে। পোস্ট গ্রাডে এই সেমিস্টারে খুব বেশী নতুন শিক্ষার্থী নেয়া হয় না। তারপরেও চেষ্টা করতে পারেন। ভর্তির শেষ সময় অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বর-এর মধ্যে।
৩। সামার (মে- অগাষ্ট): এই সময় বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর ছুটি থাকে। বিশেষ করে যারা আন্ডার গ্রাড লেভেল-এ পড়ে। পোস্টগ্রাড-দের গবেষণা অথবা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। উল্লেখ্য বেশীর ভাগ ছাত্র ছাত্রী যারা এখানে বাংলাদেশ থেকে পোস্ট গ্রাড লেভেল-এ পড়তে আসে, তারা রিসার্চ ফান্ড থেকে সাহায্য পায়- বিনিময়ে অধ্যাপক ইচ্ছামত খাটিয়ে নেন।
শিক্ষাগত মান:
কানাডার শিক্ষার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল এদের মান প্রায় সমান। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারী কিন্তু স্বায়ত্ব শাসিত। যে বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রোগ্রাম অফার করে, তার ভাল অবকাঠামো আছে। তাই কানাডার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-এর রেংকিং নিয়ে অনেকের দ্বিমত, ত্রিমত আছে। তাই আমি বলব কানাডায় পড়ার জন্য রেংকিং না দেখে অন্যান্য কিছু বিষয় দেখলে অনেক লাভবান হবেন। এগুলো নিয়ে পরে বলছি। এখানে বেশির ভাগ প্রোগ্রাম সেন্ট্রাল-লি কন্ট্রল করা হয়- বোর্ড এর মাধ্যমে। প্রকৌশল বিভাগ প্রত্যেক প্রভিন্স-এ (প্রভিন্স গুলো ইউ এস এ-র স্টেট-এর মত স্বায়ত্ব শাসিত) একটি বোর্ড দিয়ে কন্ট্রল করা হয়। অন্যান্য বিষয় কম বেশী তাই।
খরচ:
এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি আলাদা ভাবে আলোচনা করছি।
থাকার খরচ:
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস-এ থাকতে হলে ডর্মে (বাংলাদেশে হল-এর অনুরূপ) থাকতে হবে। খরচ হবে প্রতি চারমাসে ৩,০০০ থেকে ৭,০০০ ডলার পর্যন্ত- সুযোগ সুবিধার উপর ভিত্তি করে। খাওয়ার খরচ মিল প্লান-এ আলাদা ভাবে কিনতে হবে- ডর্মে থাকলে সেটা সাধারণত বাধ্যতা মূলক। ডর্মে থাকা বাঙ্গালী শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল খাওয়া। মোদ্দা কথা ডর্মে থাকা অনেক ব্যয়বহুল- কিন্তু ঝামেলা মুক্ত।
যারা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন তাদের খরচ একজনের জন্য এরকম হয়:
১। বাসা ভাড়া: ২৫০- ৮০০ ডলার (শেয়ার করে থাকলে কম খরচ)
২। যোগাযোগ: বাস পাস (৬০$-১৫০$) অনেক প্রভিন্স-এ শিক্ষার্থীদের বাস পাস ফ্রি। (যেমন আলবার্টা)
৩। খাওয়া: বাসায় রান্না করলে ১০০-২০০$; বাইরে খেলে: ৩০০-৬০০$
৪। ফোন এবং ইন্টারনেট: শেয়ার করলে খরচ অনেক কমে যায়। কমপক্ষে ৫০-১০০$ ধরে রাখুন।
(উল্লেখ্য: শহর থেকে শহর-এ আলাদা হতে পারে। আপনার থাকার উপর-ও নির্ভর করে। উপরের খরচ একজনের মোটামুটি থাকার মত খরচ।)
এখন পড়ালেখার খরচ-এ আসা যাক। প্রতি একাডেমিক ইয়ার-এ বিশ্ববিদ্যালয় ফি বাবদ খরচ প্রায় ১৫,০০০ থেকে ২৮,০০০ কানাডিয়ান ডলার পর্যন্ত। ইমিগ্রেন্ট বা সিটিজেন-দের জন্য এ খরচ ৪,০০০ থেকে ৭,৫০০ ডলার পর্যন্ত। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার আরো অনেক কম বেতন (৮-১৪ হাজার ডলার)। সাধারণত এসব বিশ্ববিদ্যালয় একটু ছোট শহরে অবস্থিত হয়। তাই ক্যারিয়ার-এর দিকে সুবিধা কম থাকে। কিন্তু ভাল দিক হল খরচ অনেক কমে যায়।
টাকা আসবে?:
আন্ডারগ্রাড: আন্ডারগ্রাড-দের জন্য কানাডায় খুব বেশি সুবিধা নেই। অল্প কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এই লেভেল-এ স্কলারশিপ দেয়; যা মূল খরচ-এর চেয়ে অনেক কম। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়- যারা বেশী বেতন রাখে তারা স্কলারশিপ দিয়ে রেগুলার বেতন-এর সমান করে দেয়ার মত সৌজন্য দেখায়। ভাল রেজাল্ট করলে ছোট খাট কিছু স্কলারশিপ পাওয়া যায়। একাধিক স্কলারশিপ পেলে চাপ অনেক কমে যায়- যা পাওয়া অনেক কঠিন। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়-এর পলিসি-তে বলাই থাকে শুধু মাত্র আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রী হওয়ার কারণে আপনি কোন স্কলারশিপ পেতে পারবেন না। এটা চেক করা গুরুত্বপূর্ণ।
এখানে কিছু প্রোগ্রাম-এ কো-ওপ নামে একটি অপশন অফার করে। এটি অনেকটা ইন্টার্নশিপ-এর মত। তবে কোম্পানীগুলো পে করে এবং বেশ ভাল অঙ্কের। কো-অপ নিয়ে আরেকটি লেখা আমি শিঘ্রী লিখব। তবে কো-অপ-এ ঢুকতে হলে অনেক ভাল সিজিপিএ লাগে- একটি অতিরিক্ত কোর্স এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরীক্ষা দিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়-কে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় ফি বাবদ- তবে যা আসে তা অনেক সাহায্য করে।
এ ছাড়াও অফ ক্যাম্পাস ওয়ার্ক পারমিট-এর সুবিধা আছে। এই সুবিধা পেতে অবশ্য প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। ৬ মাস ফুল টাইম পড়া শুনার পরে আপনি এপ্লাই করতে পারবেন, কিন্তু কাগজ যোগাড় করতে সময় লাগায় মোট ৭-৮ মাস লেগে যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ-কে সন্দেহজনক দেশ-এর তালিকায় যুক্ত করায় প্রসেসিং সময় ১৫ দিনের বদলে কমপক্ষে ৩ মাস লাগে। সব মিলিয়ে প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হবে কাজ করার পারমিশন-এর জন্য। এর আগে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করা অবৈধ। তার আগে এবং পরে অন ক্যাম্পাসে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারেন- যা পাওয়ার সম্ভাবনা শুরুর দিকে খুবই ক্ষীণ। অফ/অন ক্যাম্পাস কাজ করে থাকা খাওয়ার খরচ তোলে সম্ভব।
মূলত আমি বলব, যারা কমপক্ষে পুরো ৩ বছরের টিউশন ফি + প্রথম বছরের থাকার খরচ দেয়ার মত টাকা দিতে সক্ষম শুধু তাদের আসা উচিত। কেন? কানাডা-তে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পণ্যের মত দেখা হয়। কানাডা-র জাতীয় রপ্তানীর একটি বড় অংশ হল শিক্ষা। এখানকার ব্যবস্থা এমন ভাবে করে রাখা আছে যে আপনি কোন আর্থিক সমস্যায় পড়লে সাহায্য করার কেউ নেই। আবার টাকার অভাবে ক্লাস না করলে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট দিবেনা। তাই সবদিক থেকে বিপদ। একবার এরকম অবস্থায় পড়লে তা থেকে বের হওয়া কঠিন- অনেকটাই অসম্ভন। এখানেও আপনাকে সহজে ইমিগ্রেশন-ও দিবেনা। যদি আর্থিক সঙ্গতি না থাকে আমি বলব বাংলাদেশে ব্যাচেলরস শেষ করে আসুন। পোস্ট গ্রাড-এ এখানে অনেক সুবিধা।
পোস্টগ্রাড:
সাধারণত এই লেভেল-এ আসা সব ছাত্র ছাত্রী স্কলারশিপ এবং বিভিন্ন ফান্ডিং-এ আসে। টিএ (টিচিং এসিস্টেন্ট- ছাত্র ছাত্রীদের বিশেষ করে আন্ডার গ্রাড-দের সাহায্য করা), আর এ (রিসার্চ এসিস্টেন্ট- গবেষণায় সাহাযয় করা) এবং বৃত্তির টাকা মিলে সাধারণত যে টাকা অফার করে তাতে একা হলে নিজের টুইশন ফি, থাকা খরচ-এর পরেও বাসায় টাকা পাঠাতে পারবেন। তবে ভর্তি অনেক প্রতিযোগিতা মূলক। শর্ত একটাই- এভারেজ সাধারণত এ- রাখতে হবে। এর চেয়ে কমে গেলে বেতন আবার পুরোটা দিতে হবে আপনাকে। তাই এই কথাটি মাথায় রেখে মন দিয়ে পড়লে আশা করি কোন সমস্যা হবেনা। আর যারা সামর্থ রাখেন খরচ করার কিন্ত রেজাল্ট ভাল নেই তারা নিজ খরচে আসতে পারেন।
ভর্তি:
বাংলাদেশের এজেন্ট আর দালালদের দৌরাত্মে হয়তো ভয় পেতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে আন্ডার গ্রাড লেভেল-এ ডাইরেক্ট এপ্লাই করা একটু কষ্টসাধ্য। তবে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড থাকলে কাজটি অনেক সহজ হয়ে যায়। নিচে কিছু লিন্ক দিব যেগুলো আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ওয়েব সাইটে গেলেই দেখবেন শুরুর পেইজ-এ "প্রোস্পেক্টিভ স্টুডেন্ট" অথবা "ফিউচার স্টুডেন্ট" নামে একটি লিন্ক আছে। মোটা মুটি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইটে এটি একই। এখানে ক্লিক করলে জানতে চাবে আপনি কোন লেভেল-এ আগ্রহী। এখন নিশ্চয়ই জেনে গেছেন কোন লেভেল। সেখানে প্রয়োজনীয় সব তথ্য, যোগ্যতা, আবেদন পত্র পাবেন। ২-ভাবে আবেদন করা যায়। ১. কাগজের মাধ্যমে ২. অনলাইন-এ সরাসরি। কাগজের মাধ্যমে আবেদন করার ফরম অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট করতে পারেন। ব্যাঙ্ক ড্রাফট করতে যে কি ঝামেলা হবে সেটা আমি কিছু বলতে চাইনা- হয়তো এটাই হবে আপনার প্রথম বাধা। অনলাইনে এপ্লাই করার সময় মনে রাখবেন- এটা সিরিয়াস ব্যাপার। আবেদন পত্র শেষ হওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ফি না দিলে এটা কোন কাজে আসবেনা। এবং আবেদন করার আগে শিওর হয়ে নিবেন সেটা ঠিক সাইট। অনেক ভুয়া সাইট-এ প্রতারিত হতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে অবশ্যই খবর নিবেন। ওয়েব-এ ঐ বিশ্ববিদ্যালয়-এর নিজের সম্বন্ধে বলা সব কথা বিশ্বাস করবেন না। অনেকে অদ্ভুত কিছু রেংকিং-এ নিজেদের ভাল অবস্থান দাবি করে- তাতে খুব একটা পাত্তা দিবেন না। কি কি দেখতে পারেন?
১। বিশ্ববিদ্যালয়-টির নাম আপনি আগে কারো কাছ থেকে শুনেছেন কিনা।
২। শুনে থাকলে কি শুনেছেন।
৩। আপনি যে বিষয়ে আগ্রহী সেই বিষয়-এ ঐ বিশ্ববিদ্যালয়-এর আলাদা সাইট আছে- সেখানে যান। তাদের ফেকাল্টিদের প্রোফাইল দেখুন। কি কি রিসার্চ করে তা দেখুন।
৪। আপনার আগ্রহের প্রোগ্রামে কি কি ফেসিলিটি আছে তা দেখুন।
৫। ঐ বিষয়ে তাদের কোন সাম্প্রতিক সাফল্য দাবি করার মত কিছু আছে কিনা দেখুন। থাকলে তা যাচাই করুন।
৬। বিশ্ববিদ্যালয়-টি স্কলারশিপ প্রদানে কতটা উদার খবর নিন।
৭। পোস্ট গ্রাড লেভেল-এ হলে ডিপার্টমেন্ট-এর উপরের দিকে কারো (চেয়ার, ডিন, এসোসিয়েট ডিন অথবা আপনার গবেষণার বিষয়ের সাথে মিলে এমন কোন অধ্যাপক-এর সাথে যোগাযোগ করুন এপ্লাই করার আগে।
৮। বিশ্ববিদ্যালয়-টি যেই শহর-এ অবস্থিত তা সম্পর্কে জানুন। সেখানে কি কি ইন্ডাস্ট্রি আছে- সেসব জায়গায় আপনার বিষয়ের চাহিদা কিরকম। দিন শেষে লোকাল-দের প্রাধান্য সবাই দেয়।
৯। থাকার সুবিধা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে খবর নিন। এসব খবর সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়-এর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী-দের অফিস-এ পাওয়া যায়। (আই এস ও নামে সাধারণত পরিচিত)
এই মুহূর্তে আর কিছু মনে আসছেনা। পরে যোগ করব।
পোস্ট গ্রাড লেভেল-এ কোথাও কোথাও আপনাকে বলবে আসার পরে একটা পরীক্ষা দিতে- কোন মডিউলে পাস না করলে কিছু আন্ডার গ্রাড কোর্স নিতে বলবে।
নিচে কিছু প্রয়োজনীয় সাইট-এর এড্রেস দিলাম:
১। http://www.ouac.on.ca/ - এটি অন্টারিওর বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তির অনলাইন সাইট। এটার মাধ্যমে এপ্লাই করতে পারেন অথবা সরাসরি এপ্লাই করতে পারেন। এটা নির্ভরযোগ্য। খরচ একটু বেশী- কিন্তু টাকা কোথায় ঢাললেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবেনা এবং অনলাইনে আপনার ভর্তির স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন। এপ্লাই করার পর এই সাইট নিয়মিত চেক করা উচিত। গুরুত্বপূর্ণ: সঠিক ফরম পূরণ করবেন।
২। http://www.aucc.ca/index_e.html কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাইট। এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন। কিন্তু সব সঠিক নয় (কিছুটা এদিক সেদিক)।
৩। http://oraweb.aucc.ca/dcu_e.html - প্রোগ্রাম অনুসারে সার্চ করে, বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একটি লিস্ট বানাতে পারেন।
৪। http://cic.gc.ca/english/study/index.asp - সরকারী সাইট- এখানে স্টাডি পারমিট এবোং পড়াশুনা বিষয়ক সব ধরণের ফর্ম এবং সরকারী সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন।
৫। http://www.studyincanada.com/english/index.asp আরেকটি উপকারী সাইট।
উপরের লেখাটি যারা পড়লেন তারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন আন্ডারগ্রাড লেভেল-এ সামর্থ্য না থাকলে আমি না আসতে উপদেশ দিচ্ছি। কারণ ২-টা:
১। আন্ডারগ্রাড লেভেল-এ বাংলাদেশের পড়াশুনার মান কোনো অংশে কম নয়। আপনি সতর্ক থাকলে এবং চোখ কান খোলা রেখে নতুন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে আগ্রহী হলে কানাডার সাথে খুব বেশি ব্যবধান থাকবেনা।
২। যারা বাংলাদেশে ভাল কোথাও ভর্তি হতে না পেরে কানাডাতে আসার চিন্তা করে থাকলে বলব আপনি বিপদে পড়বেন। প্রথমত আপনার রেজাল্ট ভালনা; কানাডায় গিয়ে পারফরমেন্স ভাল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ কানাডা-তে পড়ালেখা ভাল রকমের কঠিন। আবার টাকা না থাকার কারণএ কোথাও সাহায্য পাবেননা। কাজ করে বেতন + থাকা খাওয়ার খরচ তোলে অসম্ভব। একেবারেই অসম্ভব। তাই নিজের জীবন নষ্ট না করে বাংলাদেশে কোনো প্রাইভেট ইউনি-তে গ্রাজুয়েশন শেষ করুন। দেশে অনেক অনুকূল পরিবেশ পাবেন। তারপর ইমিগ্রেশন-এ এপ্লাই করে চলে আসুন। এটা নিয়ে আমার আরেকটি লেখা দেয়ার ইচ্ছা আছে।
আজকে তাহলে এই পর্যন্তই। হয়ত অনেক ভুল আছে। কেউ ধরিয়ে দিলে উপকৃত হব, এবং অন্যান্যরাও উপকৃত হবে। আশা করি সবাই ছোট খাট ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। লেখাটি অগাছালো মনে হলে বলবেন। রাতে না ঘুমিয়ে লিখলাম। মাথা ঠিক কাজ করছেনা। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
Subscribe to:
Posts (Atom)